জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় (জাবি) ক্যাম্পাসে এক পুলিশ কনস্টেবলের বিরুদ্ধে এক ছাত্রীকে হেনস্তার অভিযোগ উঠেছে। রবিবার (১১ জুন) রাত ১০টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের বোটানিক্যাল গার্ডেন সংলগ্ন সড়কে এ ঘটনা ঘটে। অভিযুক্ত পুলিশ কনস্টেবল মেহমুদ হারুন নারায়ণগঞ্জ পুলিশ লাইনসে কর্মরত। তার বাড়ি সাভার উপজেলায়। তাকে পিটুনির পর বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তা শাখায় তুলে দেয় শিক্ষার্থীরা। পরে নিরাপত্তা শাখা তাকে আশুলিয়া থানা পুলিশের কাছে সোপর্দ করে।
জানা যায়, রাত ১০টার দিকে বোটানিক্যাল গার্ডেন সংলগ্ন রাস্তা দিয়ে হলে ফিরছিলেন এক ছাত্রী। এসময় অভিযুক্ত পুলিশ কনস্টেবল ও তার সঙ্গে থাকা বিদ্যুৎ চৌধুরী নামে এক যুবক তার পথ আটকিয়ে বিভিন্নভাবে ওই ছাত্রীকে হেনস্থা করে। পরে ভুক্তভোগী ছাত্রী বিশ্ববিদ্যালয়ের মীর মোশাররফ হোসেন হলে থাকা তার ব্যাচমেটদের বিষয়টি জানায়। তার বন্ধুরা অভিযুক্তদের মীর মশাররফ হোসেন হল সংলগ্ন দোকানের সামনে অভিযুক্তদের দেখতে পেয়ে ধাওয়া করে। এসময় বিদ্যুৎ চৌধুরী হল সংলগ্ন ফটক দিয়ে পালিয়ে যায়। তবে অপর হেনস্তাকারীকে ধরে পিটুনির পর বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তা কর্মকর্তাদের কাছে তুলে দেয়।
ভুক্তভোগী ছাত্রী বলেন, ‘বোটানিক্যাল গার্ডেনের সমানের রাস্তা দিয়ে হলে দুই ব্যক্তি আমার পথরোধ করে ক্যাম্পাসের কিনা জিজ্ঞাসা করে। আমি পরিচয় দিলেও তাদের আচরণে তারা ক্যাম্পাসের শিক্ষার্থী নয় এটি বুঝতে পারি। এসময় আমি চলে যাওয়ার চেষ্টা করলে তারা আবার পথ আটকিয়ে ‘জঙ্গলে চলো, মোবাইল নম্বর দাও’-সহ যৌন নীপিড়নমূলক বিভিন্ন আপত্তিকর কথা বলা শুরু করে। সেসময় সেখান দিয়ে যাওয়া একটি রিকশা উঠে স্থান ত্যাগ করতে চাইলে তারা আবার রিকশা থামিয়ে আমার মোবাইল নম্বর নিতে জোরজবরদস্তি করে। এক পর্যায়ে রিকশাওয়ালার সহায়তায় ওই স্থান ছেড়ে মীর মশাররফ হলের সামনে এসে আমার বন্ধুদের বিষয়টি জানালে তারা দুজনের এক জনকে আটক করে।’
অভিযুক্ত পুলিশ কনস্টেবল মেহমুদ হারুন বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তা শাখার কাছে ‘হেনস্তার’ অভিযোগ স্বীকার করেছেন। এসময় তার কাছে অবৈধভাবে ব্যবহার করা হ্যান্ড কাফ, নকল ওয়াকিটকি এবং আইডি কার্ড পাওয়া যায় বলে নিশ্চিত করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তা শাখার প্রধান সুদীপ্ত শাহীন। তিনি আরও বলেন, ‘শিক্ষার্থীরা অভিযুক্তকে নিরাপত্তা শাখায় তুলে দেয়। এসময় নিরাপত্তা শাখা থেকে যোগাযোগ করা হলে আশুলিয়া থানা পুলিশের একটি টিম ক্যাম্পাসে এসে উপস্থিত হয়। আমরা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বাদি হয়ে অভিযুক্তে বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছি। এছাড়া অভিযুক্তকে আশুলিয়া থানায় সোপর্দ করেছি।’
আশুলিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. কামরুজ্জামান বলেন, ‘ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে বিষয়টি অবহিত হয়েছি। সে যা করেছে তা পুলিশ বাহিনীর জন্য অসম্মানের। অফ ডিউটিতে থাকাকালীন সে নকল ওয়াকিটকি ও হ্যান্ড কাফ ব্যবহার করেছে, যা অবৈধ। তার বিরুদ্ধে বিশ্ববিদ্যালয়ের রুজু করা মামলার পাশাপাশি বিভাগীয় মামলা হবে। পুলিশের পক্ষ থেকে সর্বোচ্চ শাস্তির ব্যবস্থা করা হবে।’